জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা টাকা না দেওয়ায় হাইলাকান্দির খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করল

জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা টাকা না দেওয়ায় হাইলাকান্দির খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করল

জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিক এবং পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা। হাইলাকান্দির খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকের বিরুদ্ধে উৎকোচ এবং দুর্ণীতির অভিযোগ।

 হাইলাকান্দী ব্লকের  অধীন ১৪ টি জিপির জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা টাকা না দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিক এবং পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা আজ বেলা ১০ টার সময় সম্পুর্ণ কোবিদ প্রটোকল মেনে হাইলাকান্দি শহরের উপকণ্ঠ গাছতলাতে স্থিত হাইলাকান্দি ব্লকের খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমানের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। হাইলাকান্দি ব্লকের অধীন ১৪ টি জিপির প্রায় সহস্রাধিক জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিকরা এই খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ গ্ৰহন করে। বিক্ষুব্ধ জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিকরা এবং পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা আজ এই প্রতিবেদককে জানান যে হাইলাকান্দি ব্লকের অধীন ১৪ টি জিপির জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিকরা বিভিন্ন সময়ে ১৫ দিন ২০ দিন এবং একমাস করে জবকার্ডের কাজ করেছেন কিন্তু আজ অবধি তাদের জবকার্ডের টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়নি। মাটিজুরি পাইকান জিপির সভাপতি তথা জেলার ৬২ টি জিপির সভাপতি/সভানেত্রীদের ইউনিয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চন্দ্র রায় এবং রাঙ্গাউটি জিপির সভানেত্রীর প্রতিনিধি আফজল হোসেন চৌধুরী জানান যে এই বিষয়ে জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দেওয়ায় জন্য অনেকবার হাইলাকান্দির খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমানের কাছে দাবি জানানোর পরও তিনি ইহাতে কর্ণপাত করেননি। বর্তমান করোনা পরিস্থিতির জন্য হাইলাকান্দির খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকের কার্যালয়ে খুব কম সংখ্যক কর্মচারী উপস্থিত হচ্ছেন। খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমান বেশিরভাগ সময়ই কার্যালয়ে গড়হাজির থাকেন। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন যে হাইলাকান্দি জেলার হাইলাকান্দি ব্লক কার্যালয় ছাড়া অন্যান্য ব্লকের মধ্যে লালা ব্লক,আলগাপুর ব্লক,কাটলিছড়া ব্লক, মণিপুর ব্লক সহ সবকটি ব্লকে এমজিএনরেগার এম আর জমা হচ্ছে। কিন্তু একমাত্র হাইলাকান্দি ব্লক কার্যালয়ে কোন ধরনের এমজিএনরেগার এম আর জমা হচ্ছে না। হাইলাকান্দি ব্লকের খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমানের এই বিষয়ে উদাসীনতা এবং অনমনীয় মনোভাবের জন্য তারা তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। মাটিজুরি পাইকান জিপির সভাপতি তথা ৬২ টি জিপি সভাপতি/সভানেত্রীদের ইউনিয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চন্দ্র রায় এবং রাঙ্গাউটি জিপি সভানেত্রীর প্রতিনিধি আফজল হোসেন চৌধুরী ক্ষোভের সঙ্গে জানান যে গতকল্য শুক্রবার হাইলাকান্দি ব্লকের খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমানকে ফোনে অবগত করা হয় যে আজ শনিবার পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের একটি দল উনার বাসভবনে এসে উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। কিন্তু আজ হাইলাকান্দির ব্লকের ১৪ টি জিপির প্রতিনিধিরা এবং জবকার্ড হোল্ডাররা এসে দেখেন যে উনার বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে উনি অন্যত্র কোথাও চলে গেছেন। তখন হাইলাকান্দি ব্লকের খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমানের এই রকমের আচরণের প্রতিবাদে ক্ষোভে স্লোগান দিয়ে এলাকা উত্তাল করে তুলেন প্রতিবাদকারী পঞ্চায়েত প্রতিনিধি সহ জবকার্ড হোল্ডার প্রায় সহস্রাধিক শ্রমিকরা। তারা এই বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করে বলেন যে হাইলাকান্দি ব্লকের খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক বিভিন্ন ধরনের দুর্ণীতি সহ উৎকোচ গ্ৰহণে লিপ্ত রয়েছেন। প্রতিবাদকারি জবকার্ড হোল্ডার শ্রমিকরা আরো বলেন যে খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমান উৎকোচ ছাড়া কোন কাজই সেংগসন করেন না। এদিকে মাটিজুরি পাইকান জিপির সভাপতি তথা হাইলাকান্দি জেলার ৬২ টি জিপি সভাপতি/সভানেত্রীদের ইউনিয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চন্দ্র রায় বলেন যে হাইলাকান্দি ব্লকের খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমান ব্লকের অধীন ১৪ টি জিপির সচিবদের সঙ্গেও মিলে অবৈধভাবে উৎকোচ গ্ৰহণে ব্যস্ত থাকেন। তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে জিপি সচিবদের তাদের দুর্ণীতিতে ইন্ধন জুগিয়ে থাকেন। মাটিজুরি পাইকান জিপির সভাপতি রাজেশ চন্দ্র রায় মাটিজুরি পাইকান জিপির সচিব নজরুল ইসলাম লস্কররের ভূমিকার উপরেও তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। এই বিষয়ে এই প্রতিবেদককে রাজেশ বাবু ক্ষোভের সঙ্গে বলেন যে ফোরটিন ফাইন্যান্সের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের বিলের টাকা আসলেও জিপি সচিব নজরুল ইসলাম লস্কর তার হেয় মনোভাবের জন্য বিলের টাকা ছাড়ছেন না। তাছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এমজিএনরেগা এম আর নিয়ে জবকার্ডে হোল্ডাররা তার কাছে গেলে তিনি অবৈও উৎকোচ চান। জিপি সচিব নজরুল ইসলাম লস্কররের এহেন আচরণের জন্য জিপি সভাপতি রাজেশ চন্দ্র রায়, আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্য একরামুল হক রিজু সহ মাটিজুরি পাইকান জিপির দশজন ওয়ার্ডে সদস্য উনার উপর প্রচণ্ডভাবে ক্রদ্ধ রয়েছেন। রাজেশ বাবু আরো বলেন যে হাইলাকান্দি ব্লকের খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমান এবং মাটিজুরি পাইকান জিপির সচিব নজরুল ইসলাম লস্কররের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে ইতিমধ্যে হাইলাকান্দি জেলা পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক জয়দীপ শুক্লার কাছে একটি স্মারক পত্র প্রেরণ করেছেন। তিনি হাইলাকান্দি ব্লকের খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিক হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য মিডিয়ার মাধ্যমে হাইলাকান্দির নবাগত জেলা উপায়ুক্ত রোহন কুমার ঝার দৃষ্টি আকর্ষণ করে উনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং বলেছেন যে এই বিষয়ে একটি স্মারকপত্র অতি সত্ত্বর হাইলাকান্দির নতুন জেলা উপায়ুক্ত রোহন কুমার ঝার হাতে দেওয়া হবে। আজকের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এবং জবকার্ড হোল্ডাররা সাফ জানিয়ে দেন যে তাদের বকেয়া পাওনা টাকা অতি সত্ত্বর মিটিয়ে না দিলে তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হবেন। আজকের এই খণ্ড উন্নয়ন আধিকারিকের বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ কারী উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাটিজুরি পাইকান জিপির সভাপতি তথা হাইলাকান্দি জেলার ৬২ টি জিপির সভাপতি/সভানেত্রীদের ইউনিয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চন্দ্র রায়,রাঙ্গাউটি জিপি সভানেত্রীর প্রতিনিধি আফজল হোসেন চৌধুরী,অসম গণ পরিষদের আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বড়ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক নজমুল হোসেন বড়ভুইয়া,মাটিজুরি সমবায় সমিতির প্রাক্তন সভাপতি কামরুল আমিন লস্কর,বোয়ালীপার জিপির সভাপতি শরিফ উদ্দিন লস্কর, সুদর্শনপুর বন্দুকমারা জিপির সভাপতি সুলতান আহমেদ, বাহাদুরপুর জিপির সভাপতি জাকির হোসেন,সিরীষপুর জিপির সভানেত্রীর প্রতিনিধি রাজু রবিদাস প্রমুখ ব্যাক্তিবর্গ।

LEAVE A COMMENT

Comment